দৈনিক সান্তাহার

অধিকাংশ পোলট্রি খামার বন্ধ

Poultryসান্তাহার ডেস্ক:: শস্য ও মৎস্য ভাণ্ডার খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘিতে খাদ্য, ওষুধ, বাচ্চা ও পোলট্রি উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পোলট্রি শিল্পে ধস নেমেছে। অর্ধেকের বেশি খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রত্যক্ষ ও পরেক্ষভাবে বিপুলসংখ্য শ্রমিক বেকার হয়ে গেছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আবদুল জোব্বার, বকুল, স্বপন প্রমুখ খামারি জানান, আদমদীঘি উপজেলায় শতাধিক পোলট্রি খামার রয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারি না থাকায় বাচ্চা, খাদ্য ও অন্যান্য উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি রোগবালাই বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারগুলোর মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। দুই বছর আগে একটি লেয়ার বাচ্চার দাম ছিল ১৫-২০ টাকা। এখন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। একইভাবে ২০-২৫ টাকার বয়লার বাচ্চা ৬০-৭৩ টাকা ও সোনালী জাতের বাচ্চা ১৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা হয়েছে। ১২ টাকা কেজির রেডিফিট ৩৫-৪০ টাকা, পোলট্রি খাদ্য তৈরির উপকরণ ভুট্টা ১২ টাকা থেকে ২৭ টাকা কেজি, সয়াবিন প্রতি কেজি ২৬ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা ও মিটবোন ৩২ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় সম্ভাবনাময় এ শিল্প লোকসানি শিল্পে পরিণত হতে চলেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি পুঁজির পোল্ট্রি খামারি রানা, মজিদ, কুদ্দুস প্রমুখের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি নীতিমালা না থাকায় ভারতীয় ডিম, বাচ্চা এবং ওষুধ দেশের বাজার অনেকটা দখল করে ফেলেছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে লোকসান হচ্ছে। ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি, শিল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একই অবস্থা জেলার অন্যন্যা উপজেলাতেও। আদমদীঘি উপজেলা পোলট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আলম রবীন মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানান, গত বছর প্রতি বস্তা প্রোটিন মাল্টিসির দাম ছিল ১৩শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা। এখন সাড়ে তিন হাজার টাকা। মিথুইনাইনের দাম প্রতি বস্তা আড়াই হাজার টাকা থেকে বেড়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা হয়েছে। লাইসিনের দাম ছিল প্রতি বস্তা ৩ হাজার টাকা। বর্তমানে ৭ হাজার টাকা। ঝিনুক প্রতি বস্তা ৩০০ টাকার পরিবর্তে এখন ৪০০ টাকা। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি হালি ডিম এখন ২৭-৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি মুরগি ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সংগঠনের সভাপতি নাহিদ রানী তৃপ্তি জানান, এ উপজেলার প্রায় ৫০ ভাগ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। আর বাকি ২০ ভাগ বন্ধ হওয়ার পথে। বেকার যুবকরা ঋণ নিয়ে খামার করেছিলেন। এখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আদমদীঘি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এসএম মাহবুবুর রহমান জানান, খাদ্য ও ওষুধের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুদ্র খামারিরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। অনেকে খামার বন্ধ করতে চেয়ে মাঠকর্মীরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছেন ও তদারকি করছেন। তাদের ব্যবসায় লাভ করানোর চেষ্টা চলছে।

>> সান্তাহার ডটকম/ইএন/২৪ এপ্রিল ২০১৭ইং