নাজমুল হক ইমন:: আমরা যারা সান্তাহারের বাহিরে থাকি তাদের মন পড়ে থাকে আমাদের প্রাণের এই শহরে। কথাটি কি আমি ভুল বলেছি, জানি ভুল হবার নয়। যেখানে আমাদের জন্ম, যে জায়গাতে বেড়ে ওঠা, যে এলাকার মুক্ত বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস, বিশুদ্ধ অক্সিজেন আমাদের শরীরে। যেটি আমাদের জন্মভূমি-মাতৃভূমি, যে এলাকার আঞ্চলিক ভাষা এখনো আমাদের মুখে। সে শহর কেমন করে ভুলি। সান্তাহার তো আমার প্রাণের শহর, প্রিয় শহর।
যারা আমরা প্রবাসে থাকি, যারা আমরা ঢাকাতে থাকি, যারা আমরা সান্তাহারের বাহিরে থাকি, তাদের সবার অন্তরেই সান্তাহার। একদিনের জন্য সান্তাহারের বাহিরের এলেও সময় গড়ার সাথে সাথে আবারও মনে পড়ে যায় নিজেদের এলাকার কথা। কেমন জানি অদৃশ্য এক মায়ায় টানে নিজেদের এই শহর। কবে ফেরা হবে, কবে আবারো নিজের এলাকার রাস্তায় চলবে পা। কালির চায়ের দোকানে কিংবা বেহঙ্গ ক্লাবের সামনের চায়ের দোকানে রং চা খেতে খেতে জমবে আড্ডা। না হলে রেল গেটে দাঁড়িয়ে কথা বলা। এই তো আমি, এই তো আমার, এই তো আমাদের ভালো লাগা।
নিজের শহর বলে নয়, কেমন জানি শান্তি শান্তি লাগে। অনেকদিন পর যখন বলে উঠি ‘হামি ভাল আছি’ তখন নিজের শরীর কেমন জানি শিউরে ওঠে। অনেকদিন পর যখন সান্তাহারে ফিরি খারির ব্রীজ কিংবা আদমদীঘি পার হওয়ার পর গা দুলে ওঠে। সান্তাহার ঢাকা রোডে বাস থামালে চিরচেনা সেই শহর আর রাস্তায় পা ফেলাতে অন্য এক ভালো লাগা। রিক্সাতে চড়ে বাড়ি ফেরা। কত মানুষের সাথে দেখা হওয়া, এ এক অন্য অনুভূতি।
সান্তাহার আমাদের শহর। রেলগেট, স্টেশন এলাকা, সরকারি-বেসরকারি-মহিলা কলেজ, সোনার বাংলা মার্কেট, রথবাড়ি, বিপি স্কুল, হার্ভে স্কুল, একাডেমি স্কুল, পূবার্শা হল, মালা হল, বার্মা রোড, নাটোর বাইপাস, হাউজিং কলনী, লকু কলনী, বাঁশহাটি, নতুন বাজার, পুরানো বাজার সব মিলিয়েই তো আমি, আমার পরিচয়। সব মিলিয়েই তো আমার ভাল লাগা। এই তো আমি, এই তো আমার সান্তাহার।
আমি সান্তাহারের ছেলে, এটিই আমার পরিচয়। আমি বাংলাদেশের মানচিত্রে থাকা ক্ষুদ্র এক এলাকার মানুষ। যেখানে আছে আমার শান্তি, যেখানে আছে আমার চাওয়া-পাওয়া। যে এলাকায় আমি বেড়ে উঠেছি, যেখানে মানুষ আমাকে অবহেলা করে, ভালবাসে; নিন্দা করে, পুরষ্কৃত করে। যে এলাকার আঞ্চলিক ভাষাতে আমি কথা বলতে গর্ব করি। সে শহর আমার, আমি সেই শহরের সন্তান।
(পরবর্তী লেখা পড়তে পর্ব-২ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন)
সান্তাহার ডটকম/সান্তাহার ডটকম টিম/০৩-০৪-২০১৭ইং
অসাধারণ লেখা ।একেবারে হৃদয়ের গভীরে দোলা দয়ে গেল ।যদিও সান্তাহাড় আমার পার্শ্ববর্তি এলাকা তার পর ও সেই চুরানব্বই থেকে দুই হাজাড় এক পর্যন্ত সান্তহাড়ের পরতে পরতে ছড়য়ে আছে আমার জীবনের অনেক স্মৃতি ।এই মুহূর্তে নাম জানা না জানা ওনেক গুলো মুখ স্মৃতির এ্যলবামে ভেসে ওঠছে সেই সরকারী কলেজের খোলা মাঠ,বড় বড় কড়ই গাছগুলো, যার নীচে দাড়িয়ে ”পদার্থ বিজ্ঞানের আমিনুল স্যার একবার ডেকে বলেছিল ”এই শুনো তোমার কাছে একটা সিগারেট হবে ?” রেলওয়ের লাল কোয়ার্টার গুলো, যেখানে থাকতেন আকরাম স্যার যাঁর কাছে পরিসংখ্যান প্রাইভেট পড়তাম শুনেছি ওনি এখন পুলিশে যোগ দিয়েছেন,রেলগেটের কলার দোকান গুলো ,মনেপড়ে আইয়ুব ভাইয়ের কথা যার কাছে ইংরেজী পড়তাম মালা হলের পাশে ।থাকতাম তারই পাশে কাজল ভাইদের বাড়িতে ”মেসে” ।
ধন্যবাদ। লেখক আরো লেখার জন্য অনুরোধ করা হবে
ধন্যবাদ। নাজমুল হক ইমনকে পর্ব দুই লিখতে বলা হয়েছে।