সান্তাহারেও বিশেষ এবাদত বন্দেগির মাধ্যমে বুধবার রাতে পালিত হয় পবিত্র শবে মেরাজ। সারা পৃথিবী, সারাদেশের মতো সান্তাহারের ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরাও জিকির-আসকার, নফল নামাজ ও ইবাদত-বন্দেগি করেন শবেমেরাজের রাতে। সান্তাহারের প্রতিটি মসজিদে মসজিদে এশার নামাজের পর মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এই রাত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন। আল্লাহতায়ালার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয় এই মহিমান্বিত রাতে।
মেরাজ মানে ঊর্ধ্বাকাশে গমন। শবেমেরাজ মানে ঊর্ধ্বাকাশে গমনের রাত। ১৪০০ বছর আগে ২৬ রজব রাতে সাত আকাশ পেরিয়ে আরশে আজিমে আল্লাহতায়ালার সঙ্গে কথোপকথন শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসেন মহানবী (সা.)। এ ঘটনা তার মোজেজা হিসেবে প্রকাশ পেয়েছিল।
শবেমেরাজ বিশ্বাস করা মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। মেরাজ শেষে ফিরে আসার পর রাসূল (সা.) পুরো ঘটনা হজরত আবু বকরকে (রা.) বলেন। তিনি তা নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করেন। রাসূল (সা.) তাকে সিদ্দিকী বা বিশ্বাসী খেতাব দেন। মক্কার কাফেররা রাসূলের (সা.) মেরাজের ঘটনাকে অবিশ্বাস করে, কুৎসা রটায়। মেরাজ সম্পর্কে বলা হয়, মহানবী (সা.) তখন শুয়ে ছিলেন উম্মে হানির ঘরে। সেখান থেকে জিব্রাইল (আ.) তাকে নিয়ে কাবার হাতিমে যান। জমজমের পানিতে অজু করে বোরাক নামক বাহনে আরোহণ করে জেরুজালেমের বাইতুল মোক্কাদাসে যান। সেখানে রাসূল (সা.) নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে নবীজি (সা.) জিব্রাঈল (আ.)-এর সঙ্গে প্রথম আকাশে পৌঁছান। হজরত আদম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশলবিনিময় করেন। দ্বিতীয় আকাশে মহানবীকে (সা.) স্বাগত জানান হজরত ঈসা (আ.)। তৃতীয় আকাশে অভ্যর্থনা জানান হজরত ইয়াহইয়া (আ.)। এভাবে সাত আকাশ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে মহানবী (সা.) সাক্ষাৎ করেন হজরত ইদ্রিস (আ.), হজরত হারুন (আ.), হজরত মুসা (আ.) এবং হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সঙ্গে। সপ্তম আকাশে সিদরাতুল মুনতাহায় গমন করেন মহানবী (সা.)। বাকি পথ তিনি একাই পাড়ি দেন। সেখান থেকে নবীজি রফরফ নামক একটি যানে আরশে আজিম যান। সেখানে এক ধনুক দূরত্ব থেকে আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন হয়।
সান্তাহার ডটকম/সান্তাহার ডটকম টিম/০৫-মে-২০১৬ইং
Add Comment