দেশে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে কুঁচিয়ার পোনা উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ইনস্টিটিউটের সান্তাহার প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এই সাফল্য পান।
সান্তাহার মৎস্য গবেষণা উপকেন্দ্র সূত্র জানায়, দেশে কুঁচিয়া (মনোপটেরাস কুঁচিয়া) সাধারণত মাইট্যা কুঁচিয়া (মাড ইল) নামে পরিচিত। এটা পুষ্টিকর ও সুস্বাদু মাছ। এর ঔষধি গুণও রয়েছে। এই মাছটি প্রাকৃতিকভাবে অগভীর উন্মুক্ত জলাশয়ে, যেমন হাওর, বাঁওড়, বিল, খাল ও প্লাবনভূমিতে পাওয়া যায়। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ কয়েকটি দেশে কুঁচিয়া রপ্তানি করে আসছে। ২০০৮-০৯ সালে বাংলাদেশ কুঁচিয়া রপ্তানির মাধ্যমে ২ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করেছে। যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৩-১৪ সালে ১৪ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৫টি দেশে কুঁচিয়া রপ্তানি হচ্ছে।
সান্তাহার প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রের প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডেভিড রিন্টু দাস বলেন, কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে প্রথমবার আড়াই হাজার পোনা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। উপকেন্দ্রে ‘বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কুঁচিয়া প্রজাতির (এম কুঁচিয়া) খাদ্য, খাদ্যাভ্যাস বিশ্লেষণ এবং কৃত্রিম প্রজনন’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে।
উপকেন্দ্র সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে কুঁচিয়া ও কাঁকড়ার ওপর গবেষণা করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় কুঁচিয়া ও কাঁকড়ার ওপর গবেষণা পরিচালনার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুঁচিয়া ও কাঁকড়া চাষ এবং গবেষণা’ শীর্ষক একটি উন্নয়ন প্রকল্প তিন বছরের জন্য অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল আগামী ১ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে। প্রকল্পটি বিএফআরআই ও মৎস্য অধিদপ্তর যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে। কুঁচিয়ার কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন করা সম্ভব হলে এর বাণিজ্যিক চাষ শুরু করা সম্ভব হবে।
মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, কুঁচিয়া চাষ ও গবেষণাবিষয়ক নতুন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ায় দেশে কুঁচিয়ার চাষ ও গবেষণার নতুন দিক উন্মোচিত হবে।
সান্তাহার ডটকম/সান্তাহার ডটকম টিম/২৪-০৪-২০১৬ইং
Add Comment