সান্তাহারে আশংকাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে ছিন্নমূল শিশু শ্রমিকের সংখ্যা। যে বয়সে বই খাতা কলম নিয়ে স্কুলে যাবার কথা সেই বয়সে ভাগ্যক্রমে তারা ভিক্ষা বৃদ্ধি, ভাংড়ি কুড়ানো, চোরাকারবারীসহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে এসব শিশু। এদের বেশির ভাগ জড়িয়ে পড়ছে চোরাকারবারী কাজের সাথে। ফলে সান্তাহার-হিলি সীমান্ত রেলপথে শিশু-কিশোর চোরাকারবারীর সংখ্যাও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েকজন কিশোর এর সাথে কথা বলে জানা গেছে দরিদ্রতা, অশিক্ষা, পারিবারিক কলহ, বিচ্ছেদ, বাবা মায়ের একাধিক বিবাহ, পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুসহ নানা রকম প্রতিবন্ধকতার কারণে শিশুরাই এসব কাজে জড়িয়ে পড়ছে। সান্তাহার-হিলি সীমান্ত রেলপথে রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক শিশু কিশোর চোরাকারবারী। এরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চোরাপথে ট্রেনযোগে শাড়ি কাপড়, থালা-বাসন, জিরা, এলাচ, কসমেটিক সামগ্রী, ফেন্সিডিল, বিভিন্ন ব্যান্ডের মদসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মালামাল আনা নেয়া করছে। এসব শিশুরা প্রকাশ্যভাবে অবৈধ মালামাল আনা নেয়া করলেও প্রশাসনের লোকজন তাদের দেখেও দেখে না। এরা শুধু মাদক দ্রব্য আনা নেয়াই করছে না তারা ধীরে ধীরে অল্প বয়সেই নিজেরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। চোরাকারবারীর সাথে জড়িত অনেক কিশোর ভারতীয় ও বাংলাদেশের আইনশৃংখালা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে কারাভোগ করছে। এ ছাড়াও সান্তাহার শহর এবং আশপাশ এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধ শতাধিক ভাংড়ি কেনা বেচার দোকান। ফলে এ শহরে দুই শতাধিক শিশু কিশোর ভাংড়ি কুড়ানোর কাজ করছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের অলি গলিতে এবং ময়লা আবর্জনার স্তূপ থেকে লোহার টুকরো, ছেঁড়া স্যান্ডেল, সেভেন আপ-পেপসির বোতলসহ বিভিন্ন প্রকার প্লাস্টিক সামগ্রী কুড়িয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এসব শিশুর মধ্যে কেউ আবার উপার্জনের সৎ পথ বেছে নিয়ে করছে ঝুঁকিপুর্ণ শিশু শ্রমিকের কাজ।
জানা যায়, ১৯৭৪ সালের শিশু আইনে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষকে শিশু হিসাবে চিহিৃত করা হয়ে থাকে। এরপরও অল্প বয়সের শিশুরা ব্যাটারি, হোটেল, গ্যাস ফ্যাক্টরি, লেদ ও ওয়েল্ডিংয়ে ও জুয়েলারিসহ বিভিন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক কারখানায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক আইনে বলা হলেও শিশুশ্রম বন্ধ হচ্ছে না। ফলে দিন দিন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সান্তাহার ডটকম/সান্তাহার ডটকম টিম/০১-০৫-২০১৬ইং
Add Comment