এখন বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পাকা ধান থাকলেও তা কাটার জন্য শ্রমিকের অভাব রয়েছে। তাই ধান কাটার জন্য বেশি দাম দিয়ে শ্রমিক নিতে হচ্ছে। নিরুপায় কৃষক বাড়তি টাকা দিয়েই শ্রমিক লাগিয়ে ধান কাটছেন। ধানের দাম না বাড়ায় শ্রমিকের পেছনে এই বাড়তি ব্যয়ের জন্য কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কা করছেন।
ধান কাটার মৌসুমে দেশের উত্তরের জেলা নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও রংপুর এলাকা থেকে শ্রমিকেরা পশ্চিম বগুড়া এবং নওগাঁ জেলায় ধান কাটতে আসেন। প্রচণ্ড গরমে এ বছর তুলনামূলক কম শ্রমিক এসেছেন এ এলাকায়। তাই শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। সাত-আটজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বিঘা ধান কাটার জন্য শ্রমিকের খরচ পড়ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এরপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকের সন্ধানে কৃষকেরা সকাল থেকে গভীর রাত জেগে সান্তাহার জংশন স্টেশনে অপেক্ষা করছেন। দেশের উত্তরের জেলা থেকে বিভিন্ন ট্রেনে শ্রমিকেরা সান্তাহার জংশন স্টেশনে এসে বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটতে যান।
সান্তাহার দমদমা গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল বলেন, এ বছর তিনি প্রায় চার বিঘা জমিতে জিরাশাইল জাতের ধানের চাষ করেছেন। শ্রমিক না পাওয়ায় এখনো ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি। একই গ্রামের কৃষক গোলাম আম্বিয়া বলেন, ধানের ভালো ফলন হলেও চড়া দাম দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। এই বাড়তি খরচের কারণে কৃষকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে উপজেলার হাটবাজারে প্রতি মণ জিরাশাইল জাতের ধান ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকারিভাবে ধানের ক্রয়মূল্যে ২২ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হলেও আমাদের মতো প্রান্তিক কৃষকরা কখনো সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে পারে না। এ কারণে এলাকার হাটবাজারে ফড়িয়াদের কাছেই অল্প দামে ধান বিক্রি করতে হয়।’
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় সাড়ে তেরো হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার ছয় ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার মধ্যে সান্তাহার ও আদমদীঘি সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ধান কাটা চলছে। এসব এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি একরে ৬০ থেকে ৬৫ মণ করে ধানের ফলন হচ্ছে। এ এলাকায় মূলত জিরাশাইল জাতের ধানের চাষ বেশি হয়েছে।
সান্তাহার ডটকম/সান্তাহার ডটকম টিম/০৫-মে-২০১৬ইং
Add Comment