সান্তাহার ডেস্ক:: হযরত বাবা আদম (রহ.) এর পুণ্য স্মৃতি বিজরিত এলাকা বগুড়া জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে আদমদীঘি উপজেলা । ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীনকালে আদমদীঘি অঞ্চল পৌন্ড্র রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত এক অংশ হিসাবে বিবেচিত হতো। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে এ অঞ্চলে পৌন্ড্র রাজ্যের প্রশাসকগণসহ মৌর্য গুপ্ত এবং গৌর শাসনাধীনে ছিল। অষ্টম শতাব্দির মাঝামাঝি সময় থেকে পাল রাজ্যের শাসনাধীনে আসে এবং তা একাদশ শতাব্দির পযর্ন্ত স্থায়ী হয়।
এর নাম করণের পেছনে রয়েছে বিশাল কাহিনী। মহাস্থান গড়ের সুলতান ইব্রাহিম বখলীর (রহঃ) মুত্যুর পর ইসলাম প্রচার স্থিমিত হয়ে আসে। এসময় বিক্রমপুরের রাজা বল্লাম সেন এই এলাকায় শাসন করতেন। তার শাসনামলে নির্যাতনের সংবাদ পেয়ে খোরাসান থেকে বাবা আদম (রহ.) তার ১২ সহচর নিয়ে এইখানে আস্তানা গড়েন। সেই সময় পানির কষ্ট দেখে নাটোরের বিখ্যাত রাণী ভবানী একাট দীঘি খনন করে এই সাধকের নামে উত্সর্গ করেন। এর কিছু দিন পর মাজারের উত্তরে আরও একটি দীঘি খনন করা হয়। এই দীঘি বাবা আদমের নামানুসারে পরবর্তীকালে এই স্থানের নাম হয় ‘আদমদীঘি’। কথিত আছে, আদম (রহ.) এর ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে হাজার হাজার মানুষকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। গরু জবাই করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। এমন সময় একটি পাখি এক টুকরো গরুর মাংস বল্লাল সেনের দেব মন্দিরের পার্শ্বে ফেলে দেয়। এ দৃশ্য দেখে রাজা বল্লাল সেন ক্ষিপ্ত হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হন। এ যুদ্ধে আহত হয়ে বাবা আদম (রহঃ) ফিরে এলেন আদমদীঘিতে । এর কিছুদিন পর তিনি এখানে ইহলোক ত্যাগ করেন। তাকে কবর দেয়া হয় ওই দীঘির পাড়ে। এখানে গড়ে উঠেছে মসজিদ ও মাদরাসা। বাবা আদমের নামের সাথে দীঘির নাম যোগ করে নাম করন হয় আদমদীঘি। এই মাজারকে ঘিরে প্রতি বছরের ফ্রেবুয়ারি মাসে ওরশ মোবারক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া শিয়ালশন গ্রামের হযরত শাহ রেজা দরবেশের মাজার , শাহাপুরে দেওয়ান গাজী রহমানের মাজার, গোব্দিপুরে দেওয়ান চাচার মাজার, বশিপুরে দুলু বাবার মাজারসহ এ উপজেলায় বহু পীর কামেলের মাজার রয়েছে।
>> সান্তাহার ডটকম/ইএন/১৮ মার্চ ২০১৭ইং
Add Comment